Halloween Costume ideas 2015

Behiond The Seen of Bangladesh

পর্যটনে হিমালয় কন্য পঞ্চগড়


পর্যটনে হিমালয় কন্য পঞ্চগড়


পঞ্চগড়: হাজার বছরের গৌরব-গাঁথা ও প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্যের অগণিত স্মৃতিমণ্ডিত বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জনপদ হিমালয় কন্যাখ্যাত পঞ্চগড়।

পুন্ড্র, গুপ্ত, পাল, সেন ও মুসলিম শাসনামলের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এ জনপদ। সেইসঙ্গে রয়েছে অপরুপ ‍প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

পর্যটনের সব উপাদান বর্তমান থাকায় ও উত্তরের শীতপ্রবণ এই জেলার অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে দিন দিন ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বাড়ছে পঞ্চগড়ের কদর। ফলে হিমালয় কন্যাকে পরিকল্পিত পর্যটন জেলা হিসেবে গড়ে তোলার দাবি উঠেছে।

পঞ্চগড়ের সর্ব উত্তরের উপজেলা তেতুলিয়ায় রয়েছে বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট।

এখানেই অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের একমাত্র সম্ভাবনাময় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর।

নিত্যদিন দেশের জিরোপয়েন্ট দেখতে ভিড় লেগেই রয়েছে পর্যটকদের। ভিড় করছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরাও।

এই বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের দূরত্ব মাত্র ৬১ কিলোমিটার, এভারেস্ট শৃঙ্গ ৭৫ কিলোমিটার, ভুটান ৬৪ কিলোমিটার, চীন ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিং ৫৪ কিলোমিটার ও শিলিগুড়ি ৮ কিলোমিটার।

জেলার আরেক পর্যটন স্পট কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব হাতের কাছেই। শরতের শেষের দিক হতে শীত পর্যন্ত তেতুলিয়া ডাক বাংলোতে দাঁড়িয়ে উত্তরের মেঘমুক্ত আকাশে তাকালেই চোখে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার মন হরণীয় মায়াবী দৃশ্য।‍

মনোরম আবহে প্রকৃতির এই অপরুপ সৌন্দর্য ভ্রমণ পিপাসুদের মনে অপার্থিব মায়ার ঘোর সৃষ্টি করে।

তেতুলিয়া উপজেলার বুক চিরে বয়ে গেছে নয়নাভিরাম মহানন্দা নদী। এর তীর ঘেঁষে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর পিকনিক কর্ণার ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।

অপূর্ব সুন্দরের রাজ্য পঞ্চগড়ের অনন্য আরেক দিক হলো এখানকার সবুজের নৈসর্গ চা বাগান। দেশের একমাত্র এখানেই সমতল ভূমিতে চা চাষ করা হয়। জেলার চা বাগানগুলোতে সবুজারণ্যে চা গাছ থেকে পাতা তোলার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে আসে।

পর্যটকদের কাছে পঞ্চগড়ের আকর্ষণীয় জায়গা ও স্থাপনার মধ্যে আরও রয়েছে মোঘল স্থাপত্য মির্জাপুর শাহী মসজিদ, বার আউলিয়ার মাজার, সনাতন ধর্মের বোদেশ্বরী মন্দির, ভূগর্ভস্থ পাথর তোলার দৃশ্য, ১৫০০ বছরের পুরাতন সুবিশাল মহারাজার দীঘি, দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রত্নতত্ত্ব নির্দশন ভিতরগর দূর্গনগরী।

এছাড়া মৌসুমে এ জেলার ছোট-বড় কমলা বাগানগুলোতে রসালো কাঁচা-পাকা কমলাও পর্যটকদের কাছে এক বড় আকর্ষণ।

এদিকে, ভূগর্ভে পাথর থাকায় এই জেলার পানি অত্যন্ত ঠাণ্ডা ও সুস্বাদু, যা বোতলজাত মিনারেল ওয়াটারকেও হার মানায় বলে দাবি স্থানীয়দের।

অতিথিপরায়ণ ও সহজ-সরল হিসেবে পঞ্চগড়ের মানুষের খ্যাতি রয়েছে। পঞ্চগড়ে আসা দর্শনার্থী ও ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য থাকার নানা ব্যবস্থাও রয়েছে। থাকতে পারেন সরকারি বাংলো বা বেসরকারি বিভিন্ন হোটেলে।

তেতুলিয়া ডাকবাংলো পিকনিক কর্ণারের কেয়ারটেকার সফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, অক্টোবর থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তেতুলিয়ায়  পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে।

এখানে বেশিরভাগ মানুষই আসেন হিমালয় দেখতে। শীত মৌসুমে প্রতিদিন এখানে প্রায় ৫০-৬০টি গাড়ি করে মানুষজন আসেন।

তিনি জানান, গাড়িপ্রতি ২০০ টাকা ও ডাকবাংলোর হলরুমের জন্য গ্রুপপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়।

তেতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিন জানান, পর্যটকদের আগমনে সরকারি রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ী, রিকশা-ভ্যান চালক ও আবাসিক হোটেলগুলোর বেশ আর্থিক উন্নয়ন হচ্ছে। তেতুলিয়ার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও পর্যটকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

তিনি পর্যটকদের আসা-যাওয়া অব্যাহত থাকলে বিশ্বের মানচিত্রে তেঁতুলিয়া একটি অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি পাবে।

রাজধানী ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের দূরত্ব প্রায় ৬০০ কিলোমিটার। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়কপথেই সরাসরি আসা যায় পঞ্চগড়ে। তবে আকাশপথে আসতে হলে প্রথমে পাশের জেলা নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসতে হবে। পরে সেখান থেকে গাড়িতে করে পঞ্চগড়।

Post a Comment

Thenks for your comments.

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget