Halloween Costume ideas 2015

Behiond The Seen of Bangladesh

শিশুদের হাসি, শিশুদের মনোজগৎ শিশুরা কেন হাসে – রহস্য জানুন

 (ভিডিও সহ)



                            

শিশুর সুন্দর হাসি

কয়েক মাস থেকে কয়েক বছরের বাচ্চা সারাক্ষণই ফিক ফিক করে হাসছে। কোনো কৌতুক বলা হলে এরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারে না, তারপরও হাসে কেন? কী কারণে এ হাসি? এমন প্রশ্ন মজার মনে হলেও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ। আর এর উত্তর মানুষের মস্তিষ্ক গঠিত হওয়ার প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দেয়। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের গবেষক টম স্ট্যাফোর্ডের একটি প্রতিবেদনে শিশুদের হাসি নিয়ে গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয় – শিশুদের হাসি, শিশুদের মনোজগৎ সম্পর্কে।

স্ট্যাফোর্ডের মতে, শিশুর হাসির কারণ গবেষণা কিন্তু নতুন নয়। বিবর্তনবাদ তত্ত্বের জনক ডারউইন নিজের ছেলেশিশুর হাসির ব্যাখ্যা খুঁজেছেন। আর ফ্রয়েড শিশুদের হাসি থেকে তত্ত্ব দিয়েছেন – নিজেকে বুদ্ধিমান মনে করা থেকেই হাসি আসে। যেমন – অন্য কেউ কোনো অঘটনের শিকার হলে অনেকের হাসি আসে কারণ সে ওই ঘটনার শিকার নয়।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের বুদ্ধিমত্তার পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করতেন সুইজারল্যান্ডের গবেষক জেন পিয়াগেট। শিশুর হাসি নিয়ে তার তত্ত্ব হলো, এর মাধ্যমে শিশুর মনের মধ্যে কী হচ্ছে তা বোঝা যায়। কোনো কৌতুক বুঝতে পারলে মানুষ হাসে। আর শিশুর হাসি নিয়ে গবেষণায় হয়তো পাওয়া তথ্যে জানা যাবে, এরা কিভাবে পৃথিবীকে বুঝতে শেখে। ১৯৪০ সালে তিনি এ তত্ত্ব দিলেও এর সন্তোষজনক পরীক্ষা এখনো সম্ভব হয়নি। অতীতে অনেকেই এ বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। তবে আধুনিক মনোবিদ্যায় বিষয়টি অত গুরুত্ব না পেলেও এর ব্যতিক্রম গবেষক ক্যাসপার অ্যাডিম্যান।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের মনোবিজ্ঞানী ক্যাসপার অ্যাডিম্যানের দৃঢ় বিশ্বাস, শিশুদের হাসির উৎস নিয়ে গবেষণায় সম্পূর্ণভাবে জানা যাবে, এরা কিভাবে পৃথিবীকে বুঝতে শেখে। শিশুদের হাসি নিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘ সমীক্ষা করেছেন অ্যাডিম্যান। শিশু সন্তান আছে এমন ১ হাজার মা-বাবাকে সমীক্ষার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন মহাদেশ থেকে বেছে নেয়া হয়। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এসব অভিভাবকের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষায় তাদের শিশু সন্তানদের হাসির কারণ, সময় ও স্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়।
শিশুর হাসি
শিশুদের হাসি সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য পাওয়া যায় সমীক্ষায়। সাধারণত ৩ সপ্তাহ বয়সী শিশুদের মধ্যে মুচকি হাসি দেখা যায়। শিশুরা শব্দ করে হাসে সাড়ে ৩ বছর বয়সে। তবে অনেক শিশু জোরে হাসতে এর ৩ গুণ সময়ও নেয়। পিকাবু (মুখ লুকিয়ে রেখে হঠাৎ চমকে দিয়ে মুখ দেখানো) খেলা শিশুদের সবচেয়ে আনন্দ দেয়। তবে কাতুকুতু দেয়ায় শিশুর হাসি নিশ্চিত। এ ছাড়া একটি বিষয় দেখা গেছে, অন্যের পড়ে যাওয়ার চেয়ে নিজের পড়ে যাওয়ায় শিশুদের মধ্যে হাসির সৃষ্টি হয়।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, হাসি শেখার পর থেকেই অন্যের হাসি দেখে শিশুও হাসে। কোনো কিছু হঠাৎ সরিয়ে নেয়া, হঠাৎ ফিরিয়ে আনা, মুখভঙ্গি বা কাতুকুতুর মাধ্যমে শিশুকে হাসানো নিঃসন্দেহে মজার বিষয়। তবে অন্যকে হাসতে দেখে হাসার মধ্যে রয়েছে বাড়তি কিছু। এর মাধ্যমে বোঝা যায় শিশু হাঁটতে শেখা, বলতে শেখার আগেই হাসির মাধ্যমে সামাজিকতা শেখে। শিশুর হাসিতে আরো কিছু আছে। অন্যের পড়ে যাওয়ার বদলে নিজের পড়ে যাওয়ায় শিশুরা হাসে। অন্যের দুঃখে নয়, সুখ বা হাসি দেখে এরা হাসে। এ থেকে বলা যায়, শিশুদের ক্ষেত্রে ফ্রয়েডের তত্ত্ব পুরোপুরিই ভুল।
অভিভাবকের তথ্য থেকে আরো জানা যায়, মেয়েশিশুর চেয়ে ছেলেশিশু কিছুটা বেশি হাসে। তবে ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, সব শিশুই মা-বাবা উভয়কে সমানভাবে মজার বিষয় মনে করে। এখনো তথ্য নিয়ে চলেছেন ক্যাসপার অ্যাডিম্যান। তার আশা, একসময় তিনি প্রমাণ করতে পারবেন, হাসির মাধ্যমেই শিশু কিভাবে পৃথিবীকে বুঝতে শেখে। একই সঙ্গে তিনি প্রমাণ করতে চান, শিশুরা কিভাবে বিস্ময় থেকে ধারণার ক্ষমতা পায়, কিভাবে এরা কোনো বস্তুকে মনে রাখে।
মজার বিষয় হওয়া সত্ত্বেও শিশুদের হাসি নিয়ে গবেষণা, আধুনিক মনোবিদ্যায় নিগৃহীত হওয়ার কারণ হিসেবে অ্যাডিম্যান বলেন, পরীক্ষাগারে এমন গবেষণা অসম্ভব। আর একে অনেকেই বিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে দেখতেও নারাজ। তার আশা, গবেষণার মাধ্যমে এটিই প্রমাণ হবে, শিশুদের হাসি নিয়ে গবেষণা মোটেও হাস্যকর কোনো বিষয় নয়।

Post a Comment

Thenks for your comments.

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget