মুহিব সাকিব:
পহেলা বৈশাখের সরঞ্জম সাজানো হচ্ছে রাস্তার আশ-পাশ গুলোতে...
রঙ্গ বিরঙ্গের ঘুড়ি, নকশা করা আল্পনা,নানা ধরনের রঙ্গের খেলা সব মিলিয়ে যেনো একটি জমজমাট পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে চারিপাশে....
এ সকল রঙ্গের মাঝেও ডুব দিতে পারিনি আবির,
মরুভূমিতে পথ চলার মত বালি উরিয়ে চলছে রাস্তার কর্ণধারা ধরে..
কী বা করবে সে,
বাসায় একজন মানুষ দিন রাত খেটে চলে তার জন্য এত অভাব এর মাঝেও মেয়েটির কোন ইচ্ছা আছে বলে বোজাি যায় না, কখনো বায়নাও ধরেনা,
তার জন্য আবির পহেলা বৈশাক উপলক্ষে একটি শাড়ী পর্যন্ত কিনে দিতে পারলো না,
তার উপর কাল না হয় সবার মত যদি একটু ইলিশের ঘ্রানটুকু ছুয়ে দিতে পারতো সে...
বাসায় পৌছে গেছে আবির,
ভারা করা বাড়ীর কোনরকম চলে তার সংসার,
দিন আনে দিন খায় তারা...
জীবন সঙ্গীনি হিসেবে হাত ধরে ফুটফুটো সে মেয়েটি নাম নিলাদ্রী,
আবির আদর করে ডাকতো নিলু বলে ...
গেটে টোকা পরতেই চুটে আসে নিলাদ্রী,
গেট খুলে দেখে আবির দাড়িয়ে আছে..
ক্লান্ত চোখে তাকালো আবির, নিজের প্রতি খুব ঘৃণা হচ্ছে তার, এই মেয়েটির জন্য কী করতে পারলো সে,
না দিতে পারলো সুখ না তার সব চাওয়া পাওয়া পূরন করতে পেরেছে...
নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে তার...
হঠাৎ স্তম্ভীত ফিরে পেল নিলাদ্রীর কথায়..
-- কী ভিতরে আসবে না??
--হুম, আসবো...
--কিছু হয়েছে? খাবেনা..??
--নাহ আজ খাবোনা...
আবির রুমে ঢুকে শুয়ে পড়লো,
নিলাদ্রী পিছি পিছু এসে আবিরের পাশে শুয়ে তার বুকে মাথা রাখলো,
আবির হঠাৎ নিলাদ্রীকে কিছু বলতে লাগলো...
-- আচ্ছা নিলু, তোমার খুব কষ্ট হয় তাই না??
-- কেনো, কোনো কষ্ট হবে?
-- এই যে দেখো , কাল পহেলা বৈশাখ তোমাকে একটি শাড়ী কিনে দিব ভেবেছি, তুমি সে শাড়ী পরবে সকালে রোদ পরতেই দুজন মিলে পান্তা ইলিশ খাবো, তারপর রমনার বট তলায় দুজন মিলে বসে থাকবো, কিন্তু তা আর হল কই ....
--তোমাকে কে বলেছে আমার এসব লাগবে? আচ্ছা একটা গান শুনাবে....
--হুম শুনাবো...
-- হুম শোন,কয়জন মেয়ের ভাগ্যে এমন যে তার জীবন সঙ্গীনি তাকে বুকে আকড়ে ধরে, গান গেয়ে ঘুম পারিয়ে দিবে...??
আমার জন্য এটাই সর্বস্য...
আবির চুপ করে নিলাদ্রীর চোখের দিকে তাকিয়ে আছে...দু জোড়া চোখ যেন ভালবাসা বিনিময়ে ব্যাস্ত হয়ে পরেছে...
আজ না হয় সবাই পান্তা ইলিশে নববর্ষ উৎযাপন করবে, কিন্তু এ ভালবাসার জুটি আজ না হয় ভালবাসা খেয়েই নববর্ষকে আমন্ত্রন জানান দিচ্ছে...
শুভ নববর্ষ
Post a Comment
Thenks for your comments.